আমার প্রচুর লিখতে ভালো লাগে। যে কোনও বিষয়ে । কারণ নিজের মতামত রাখার অভ্যেস আছে, নিজের মতো করে , একান্তভাবে নিজের প্রয়োজনেই । এ অভ্যেস বহু আগে থেকেই । এক সময়ে প্রচুর বকবক করতে ভালো লাগতো । বেশুমার । আজকাল খুব বেশি লোকের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে খুশি হই না, তৃপ্তি পাই না । বরং বলা ভালো বোরই হই এবং দোষটা সম্পূর্ণরূপে আমার যে আমি কমিউনিকেশনের ক্ষমতা হারাচ্ছি । প্রজাপতির মত অ্যাটেনশন স্প্যান এবং চটজলদি জাজমেন্ট-এর যুগে মন খুলে কথা বলার আপন লোক তেমন নেইও; এটাও একটা দিক অবশ্যই । যাই হোক, সবই হল গিয়ে কপাল ! যা লেখা আছে তার বাইরে হবার নয়। আমার লিখতে, প্রকাশ করতে যে এতো ভালো লাগে, অথচ লিখে ফেলার পর আমি নিজের লেখা ফিরে পড়েছি এরকম উদাহরণ খুব কম । কদাচিৎ কেউ কোনও লেখা নিয়ে কখনো ফিডব্যাক দিলে তখন চোখে চশমা লাগিয়ে ফিরে দেখা হয়েছে বার কয়েক । এছাড়া খাতা থেকে তুলে ব্লগে বা ব্লগ থেকে তুলে ম্যাগাজিনে দেবার সময় এক-দু বার পড়ে নিতে হয় । এ ব্যতিরেকে “যো বীত গয়ি সো বীত গয়ি” । বহুদিন বাদে আজ দু তিনটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা নিজের গত ৭ বছরের বিভিন্ন লেখাপত্র উলটেপালটে পড়ছিলাম । লেখাগুলির সাথে আমি বড় হয়েছি । আমার সঙ্গে আমার লেখাপত্রগুলো বড় হয়েছে । কালের অমোঘ নিয়মে অবশ্যই বয়সে এবং হয়তো কর্মগুণে খানিক গুণমানেও । নিজের লেখা নিয়ে আমি কস্তুরি হরিণ হতে চাই না , তবে একটি ব্যাপার আমাকে যথেষ্ট খুশি করলো যে নিজের লেখালিখির মধ্যে খুব কম সংখ্যক লেখাকে ফিরে দেখেই আমার মনে হয়েছে যে এটা হয়তো লেখা ঠিক হয়নি বা লেখা হিসেবে ব্যাপারটা আদৌ দাঁড়ায়ই নি । যে যে বয়সে যা যা লিখেছি , বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবারো সেই বয়সে, সেই সময়ে, সেই পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলে বিষয়গুলি নিয়ে একই ধরনের জিনিস লিখতে চাইব। প্রকাশভঙ্গী হয়তো বদলে যাবে এবং তার জন্যেই এর নাম ভাষা , তার জন্যেই এর নাম সাহিত্য। কিন্তু সাবজেক্ট ট্রিটমেন্ট-এ নিজের ভাবনার বিস্তার বয়সানুসারে কন্সিসটেন্ট রয়েছে এটা বড় স্বস্তির বিষয় । একটাই অধঃপতন হয়েছে । ১৯৯৮ – ২০০৭ এই সময়কালে ভালো শিক্ষকসঙ্গ পাবার গুণে এবং নিজের চর্চায় আমার ইংরেজি দক্ষতা খুব ভালো ছিল । ইয়ার্কি মেরে বা বিনয় করে বলা “খুব” নয় , সিরিয়াসলি “খুব”। সেটা ক্ষইতে ক্ষইতে পিটিয়ে পরা জুতোর সোলের দশায় এসে ঠেকেছে । আবার পালিশ শুরু করতে হবে, শীতটা যাক !